মামলা নিলেও আসামি গ্রেফতারে অবহেলা, পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ

জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আমিনপুর থানার ভাটকিয়া গ্রামে সালাম শেখের বাড়িতে দলবল নিয়ে হামলা চালায় প্রতিবেশী বাদশা শেখ। এঘটনায় প্রথমে মামলা নিতে না চাইলেও বিতর্কের জেরে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপের মুখে মামলা নিতে বাধ্য হন আমিনপুর থানার ওসি আনিসুর রহমান। কিন্তু আসামি গ্রেফতারে করছেন অবহেলা। প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালে ও তার অবস্থান পুলিশকে জানালেও আসামি গ্রেফতার করছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী সালাম শেখের। এদিকে আসামি গ্রেফতারে অবহেলার বিষয়টি জানিয়ে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন সালাম শেখ।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, হামলা করে বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও পরিবারের সদস্যদের জখমকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। একদিন ঘটনাস্থলে গেলেও পরে স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেও সেখানে আর যাননি। এতে আসামিরা আরো বেপরোয়া হয়ে সালাম শেখকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, মামলার অন্যতম আসামি আ: কাদের গত ১৩ অক্টোবর সকালে কাশিনাথপুর পুলিশ বক্সে সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ কিছুই বলেননি। পরদিন বিকেল ৫ টা থেকে সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত স্থানীয় ভুরকুলিয়া বাজারে পুলিশের উপস্থিতিতে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী একটি সভায় উপস্থিত থেকেছেন। সেখানে বক্তব্যও দিয়েছেন। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সাদ্দামুর রহমানকে ফোনকলে জানালেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেন নাই। তিনি বলেছেন এব্যাপারে সিনিয়র অফিসারদের সাথে আলাপ করতে হবে। এভাবেই পুলিশ আসামি গ্রেফতারে তালবাহানা করছে।

ভুক্তভোগী সালাম শেখ জানান, আসামি কাদের ও তার স্ত্রীর নাম বাদ না দেয়ার কারণে ওসি সেসময় মামলা নেন নাই। পরে চাপের মুখে মামলা নিলেও এখন তাকে গ্রেফতার করছেন না। এতে প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী কাদেরের সাথে তার যোগসাজশ রয়েছে। সবমিলিয়ে আমার সাথে করা অন্যায়ের সুবিচার অনিশ্চিত।
এব্যাপারে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম জানান, ওই আসামি ওই ঘটনার সাথে ততোটা সম্পৃক্ত নয় বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। তবুও অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার ও স্বাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদে কোনো অবহেলা থাকলে সেটি খবর নিয়ে দেখছি।

প্রসঙ্গত, আমিনপুর থানার আওতাধীন ভাটকিয়া গ্রামের সালাম শেখ ও প্রতিবেশী বাদশা শেখের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিলো। এরই জেরে গত ১ অক্টোবর বাদশা শেখ দলবলে বাঁশের লাঠি, রড, চাইনিজ কুড়াল ও চাপাতি সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সালাম শেখের বাড়ি হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা সালাম শেখের স্ত্রী ও শ্বাশুড়িকে মেরে জখম করা হয়। এঘটনার পরদিন স্বাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে আমিনপুর থানায় মামলা করতে গেলে ওসি থানায় তাদের আটকে রেখে এজাহার থেকে প্রভাবশালী কাদের মাস্টার ও তার স্ত্রীর নাম বাদ দিতে বলেন। এতে সালাম শেখ রাজি না হলে জোরপূর্বক অন্য একটি এজাহারে স্বাক্ষরও করিয়ে নেন ওসি আনিসুর রহমান। এরপর এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে পাবনার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেবার পর গত ১১ অক্টোবর এ মামলা নিলেও তার তদন্ত কাজ ও আসামি গ্রেফতারে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে।