সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বেষ্টনীতে রূপপুরে পৌঁছালো ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান

কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুরে পৌঁছেছে। সড়কপথে নেওয়ার জন্য ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে শিথিল করা হয়। বন্ধ রাখা হয় বাস চলাচল। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ভোর ঢাকা থেকে সড়কপথে রওনা হয় ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িবহর। পথে গাজীপুরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে কিছুক্ষণ থেমে থাকে। পরে সেখান থেকে ৭টার দিকে গাড়িবহর পাবনার দিকে রওনা দেয়। এদিকে ইউরেনিয়াম নিয়ে আসার জন্য সড়কপথে ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা। ঢাকা থেকে রূপপুর পর্যন্ত সড়কে ফাঁকে ফাঁকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশের তল্লাশি চৌকি বসানো হয়। পাবনা-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রূপপুর প্রকল্পে ইউরেনিয়ামের গাড়িবহর প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করলে বাংলাদেশি ও রাশিয়ান কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শ্রমিকরা দুদেশের জাতীয় পতাকা ও বেলুন উড়িয়ে স্বাগত জানান।

এর আগে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী জানান, ঢাকা থেকে সড়কপথে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম আসবে। যেহেতু পাবনা-ঢাকা রুটে অনেক সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। এজন্য যানজট নিয়ন্ত্রণে ও নিরাপত্তার স্বার্থে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে আরিচা-কাজিরহাট হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় যানচলাচল করার কথা বলা হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের প্রথম এই চালান। শুক্রবার রূপপুরে ইউরেনিয়াম এসে পৌঁছালেও রূপপুর প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের কাছে আগামী ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ইউরেনিয়াম জ্বালানি হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের মহাপরিচালক রোসাটম আলেক্সি লিখাচেভ। জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠান ঘিরে প্রকল্প এলাকায় সাজ সাজ কর্মকাণ্ড চলছে। অনুষ্ঠানকে সফল করতে এরই মধ্যে রাশিয়া থেকে বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ঈশ্বরদীর রূপপুরে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা পেয়েছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।