আজও হয়নি পাকা সড়ক, কাদা মাটি ঠেলে স্কুলে আসে শত শত শিক্ষার্থী

পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের অন্তর্গত এলাকা চর সদিরাজপুর। এই এলাকায় ৬ থেকে ৭ টি গ্রামে অন্তত ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এলাকাটিতে কোনো হাট-বাজার ও স্কুল না থাকায় ৪/৫ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে এলাকার বাসিন্দাদের যেতে হয় চর আশুতোষপুর গ্রামে। বৃষ্টির মৌসুমে হাঁটু অবধি কাদা ও খরা মৌমুমে বালির পাহাড় ঠেলে স্কুলে আসেন প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন জায়গায় এলাকাবাসী তাদের ভোগান্তির কথা জানালেও আজও মেলেনি তার প্রতিকার। আজও তারা পায়নি পাকা সড়ক। ফলে তাদের একই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বছরের পর বছর।

স্থানীয়রা জানান, কয়েকটি গ্রামে প্রায় ১০ হাজারের মত লোক বাস করেন এই এলাকায়। সম্প্রতি তার সাথে যুক্ত হয়েছে মুজিববর্ষ গ্রামের বাসিন্দারা। দুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও উচ্চ বিদ্যালয় নেই এখানে। হাট-বাজারও নেই। ফলে ৪/৫ কিলোমিটার দুরের চর আশুতোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে হয় ওই এলাকার শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টির দিনে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা হাঁটু অবধি কাদা পানি ঠেলে স্কুলে যায়। অন্যদিকে জীবিকার উদ্দেশ্যে এই এলাকার উপার্জনক্ষমদের পাবনা শহরে যেতেও এই রাস্তাটিই একমাত্র অবলম্বন। তাদেরও ভোাগন্তির শেষ নেই। নির্বাচনের সময় নেতারা আসলে নিজেদের দুঃখ দুর্দশার কথা শোনালে আশ্বাস ছাড়া গত কয়েক দশক ধরে কিছুই মেলেনি বলে অভিযোগ তাদের। সদিরাজপুর বনপাড়ার বাসিন্দা রাশেদ জানান, বছরের পর বছর আমরা এই ভোগান্তি পোহাচ্ছি। আমাদের ছেলে মেয়েরা ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারে না। ফলে শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছি আমরা। এই এলাকাতেই মুজিববর্ষ গ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। শুনলাম সুবিধাভোগীদের যাতায়াতে সুবিধার জন্য এই রাস্তা পাকাকরণ হবে। কিন্তু এটি প্রতিষ্ঠারও কয়েকবছর পেরিয়ে যাচ্ছে কোনো ফলাফল নেই। আমরা সেই অবহেলিতই রয়ে গেছি।

মধ্যপাড়ার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম লিটন জানান, সরকার বলেছিলো গ্রাম হবে শহর। অর্থাৎ গ্রামে বসেই মানুষ শহরের সুবিধা ভোগ করবে। অন্যান্য এলাকা বিবেচনায় তার অধিকাংশই বাস্তবায়ন হয়েছে বলে আমরা দেখছি। কিন্তু এই সদিরাজপুরের ক্ষেত্রেই ভিন্ন। অন্যান্য জায়গায় অলিগলিতে পাকা রাস্তা হয়েছে। অথচ প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করে তা আজও পাকা হয়নি। এটি খুবই দুঃখজনক।

এব্যাপারে পাবনা জেলা প্রশাসক মু: আসাদুজ্জামান জানান, মুজিববর্ষ গ্রামের প্রকল্পের সাথে ওই এলাকার রাস্তার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। তবে এলাকাবাসি ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় প্রয়োজনমতে ভিন্নভাবে একটি পদক্ষেপ ইউএনও’রা নিতে পারেন। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি ব্যাপারটি।