স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতির মৃত্যু

পাবনার ঈশ্বরদীতে সন্তান প্রসবের আধা ঘণ্টা পর দিপা খাতুন (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। দিপার পরিবারের দাবি, নার্সদের হাতে ডেলিভারির পরই মারা যান প্রসূতি। এ সময় হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। চিকিৎসক থাকলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেতো।মৃত দিপা খাতুন উপজেলার চর সাহাপুর গ্রামের সজিব হোসেনের স্ত্রী ও জয়নগর মধ্যপাড়া এলাকার রেজাউল করিম টিপুর মেয়ে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে দিপার প্রসব বেদনা উঠলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে স্বাভাবিক ডেলিভারিতে দিপা খাতুন একটি ছেলেসন্তান জন্ম দেন। প্রসবের সময় নবজাতক এবং দিপা উভয়ই সুস্থ ছিলেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ দিপার মৃত্যু হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মিডওয়াইফ (ডেলিভারির স্পেশাল নার্স) দিব্বা ভারতী বলেন, দিপার শরীরে রক্তের পরিমাণ অনেক কম ছিল। এটি তার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে দেখেছি। তবে রক্ত কম থাকার কারণে তার কোনো সমস্যা হয়নি। তার স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়েছে। সন্তান প্রসবের আধা ঘণ্টা পর দিপার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে অন্য কোনো সমস্যার কারণে মৃত্যু হতে পারে।

তবে দিপার স্বামী সজীব হোসেন বলেন, দিপার স্বাভাবিক ডেলিভারির পর মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের রক্তের পরিমাণ কম ছিল তা আগেই ডাক্তার বলেছিলেন। কিন্তু সে মারা যেতে পারে এটি ভাবিনি। তার ডেলিভারির সময় নার্সরা থাকলেও কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। চিকিৎসক থাকলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেতো।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শফিকুল ইসলাম শামীম বলেন, রক্তশূন্যতার জন্য প্রসূতি দিপা খাতুনের মৃত্যু হয়নি। অনেক সময় প্রসূতির হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগ থাকে। সন্তান প্রসবের সময় এ রোগের কারণে প্রসূতির মৃত্যু হয়। দিপার মৃত্যুও এ কারণে হতে পারে।

দিপার ডেলিভারির সময় চিকিৎসক না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিদিন হাসপাতালে ৪-৫টি নরমাল ডেলিভারি হয়। এসব ডেলিভারি সবই মিডওয়াইফরা (স্পেশাল নার্স) করে থাকেন। তারা এ বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এ সময় চিকিৎসকের কোনো প্রয়োজন হয় না।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, দিপার মৃত্যুর বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।