২৮ বছর পর ঈশ্বরদী বাস টার্মিনালের সংস্কার শুরু

ঈশ্বরদী খায়রুজ্জামান বাবু বাস টার্মিনাল নির্মাণের ২৮ বছর পর প্রথমবারের মতো সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) পৌর কর্তৃপক্ষ সংস্কার কাজ শুরু করেছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রী, চালক সহ স্থানীয় দোকানদাররা।

জানা যায়, ঈশ্বরদীর খায়রুজ্জামান বাবু বাস টার্মিনালের সংস্কার কাজ না করায় অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে কাদাপানিতে একাকার হয় পুরো টার্মিনাল এলাকা। ফলে বাসচালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রতিদিন দূরপাল্লা ও জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে এ টার্মিনাল থেকে প্রায় ৭০টি বাসে তিন-চার হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। অথচ বৃষ্টি হলেই টার্মিনালের ভেতরে ও আশপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

এছাড়া টার্মিনাল ভবনের অবস্থাও অত্যন্ত করুণ। ছাদ ড্যামেজ, দেওয়ালে ফাটল, ছাদের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে গেছে। শৌচাগার ব্যবহারের অযোগ্য। দেওয়াল ও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় দীর্ঘদিন ধরে একমাত্র ক্যান্টিনও বন্ধ।

পৌর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছ থেকে দুই একর জমি লিজ নিয়ে পৌর শহরের রেলগেট এলাকায় ১৯৯৫ সালের ১৯ জুলাই এক কোটি এক লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করে। পরে তারা এটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করে। পৌর কর্তৃপক্ষ প্রয়াত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খায়রুজ্জামান বাবুর নামে এটির নামকরণ করা হয় ‘খায়রুজ্জামান বাবু বাস টার্মিনাল’।

বাস যাত্রী আহম্মেদ আলী বলেন, দীর্ঘদিন পর বাস টার্মিনালের খানাখন্দ বন্ধ করা হচ্ছে এবং জমে থাকা পানি অপসারণের জন্য ড্রেন নির্মাণ হচ্ছে দেখে ভালো লাগলো। এবার বৃষ্টি হলে অন্তত পানি জমে থাকবে না। যাত্রীরা স্বস্তিতে বাসে ওঠানামা করতে পারবেন।

সুপার সনি বাসের কাউন্টার মাস্টার অলক ঘোষ বলেন, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় কাদাপানিতে পুরো টার্মিনাল এলাকা একাকার হয়ে যায়। পানি নিষ্কাশনের জন্য পৌরসভা ড্রেন নির্মাণ করে দিচ্ছে। এবার বৃষ্টি হলে ড্রেনের মাধ্যমে নিষ্কাশন হবে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা কাদা অপসারণ করে সেখানে ইট-খোয়া দিয়ে ভরাট করে দিচ্ছে। এতে টার্মিনালের যাত্রীসহ বাসের চালকদের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও নিরসন হবে। তবে আমাদের দাবি, এ বাস টার্মিনাল পুনর্নির্মাণ করা হোক। এখানে একটি আধুনিক বাস টার্মিনাল প্রয়োজন।

পাবনা জেলা মোটর মালিক সমিতির ঈশ্বরদী শাখার সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, টার্মিনালের কাদাপানি অপসারণের জন্য পৌরসভা কাজ করছে। সংবাদ প্রকাশের পর টার্মিনালের কাদাপানি অপসারণ, টার্মিনাল ভবনের চারপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার, ড্রেন নির্মাণ ও খানাখন্দ খোয়া-ইট দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। এতে কিছুটা হলেও যাত্রীদের জন্য স্বস্তি হবে।

ঈশ্বরদী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করে দেখি জলাবদ্ধতা নিরসন এখানকার প্রথম কাজ। এখানে ড্রেন কেটে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া পৌরসভার মেয়রের নির্দেশে টার্মিনালে খানাখন্দ রয়েছে সেটি ইট, খোয়া, বালু দিয়ে মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করছি, যা জনসাধারণের জন্য উপকার হবে।

ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, বাস টার্মিনালের পানি অপসারণ ও খানাখন্দ বন্ধ করে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করতে পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। তারা এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আশা করি, জনগণের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও নিরসন হবে।