নিজস্ব প্রতিনিধি:
পাবনার মুজাহিদ ক্লাব এলাকার শহীদ ফজলুল হক পৌর উচ্চ বিদ্যালয় ভবনের ৪র্থ তলা নির্মাণ কাজ বন্ধে হুমকিদাতাদের কাউকেই চেনেন না জানিয়ে এর সাথে নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততা নেই বলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। একইসাথে তাদের বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যবহারের মধ্য দিয়ে বিএনপির এক সাবেক ছাত্রনেতাকে অভিযুক্ত করে সংবাদ প্রকাশের ব্যাপারে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা। বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। এসময় বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক বলেন, অবকাঠামোগত সংকটসহ নানা প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে পাবনার মুজাহিদ ক্লাব এলাকায় প্রতিষ্ঠিত শহীদ ফজলুল হক পৌর উচ্চ বিদ্যালয় সুন্দর, সভ্য ও সুশিক্ষিত জাতি গঠনে নিরলস প্রচেষ্টায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সেবা দিয়ে আসছে। এ সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে শ্রেণিকক্ষ সহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধনে চলতি বছরের মে মাসে বিদ্যালয় ভবনের ৪র্থ তলা নির্মাণ কাজ শুরু হয়। যেটি আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হবার কথা। কিন্তু গত ৬ আগস্ট কিছু অজ্ঞাত লোক এসে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। এ নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। সেখানে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমার ও অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওই বক্তব্যে কাজ বন্ধ রাখতে হুমকি প্রদানকারী হিসেবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। কারণ আমি তাদের কাউকেই চিনি না। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করে জেনেছি তারাও সংবাদ মাধ্যমে কারো নাম উল্লেখ করে বক্তব্য দেননি। কারণ তারাও কাউকে চেনেন না। হুমকিদাতা অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা এসে যা বলেছে এবং করেছে, অল্প কথায় তার বর্ণনা দিয়েছি মাত্র। কিন্তু প্রকাশিত সংবাদে সেই বক্তব্যকে ভূলভাবে ব্যবহার করে পাবনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসলিম হাসান খান সুইট ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ বন্ধের হুমকির অভিযোগ আনা হয়েছে। এঘটনার সাথে কারা জড়িত সেটি আমরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদৌ জানি না বা জানতে পারিনি। অথচ আমাদের বরাত দিয়ে প্রকাশিত সংবাদে একজন রাজনৈতিক নেতা ও তার সমর্থকদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। যেটি আমাদের জন্য বিব্রতকর। এক্ষেত্রে প্রকাশিত সংবাদে আমাদের বক্তব্যকে ভূলভাবে ব্যবহার করায় আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একইসাথে বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজে বিঘ্ন সৃষ্টির সাথে আসল জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার সাথে এব্যাপারে কারো সাথে কোনো আলাপ হয়নি। কেউ কোনো প্রভাব বা চাপও প্রয়োগ করেনি। আমাদের বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে। সেটি পরিষ্কার করতেই আপনাদের (সাংবাদিকদের) সামনে এসেছি।
তিনি বলেন, আমি সেদিন জোহরের নামাজ আদায় করে বিদ্যালয়ে ঢুকতেই দেখি কিছু লোক নির্মাণাধীন ভবন সহ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ছবি ও ভিডিও করছেন। এরপর হুট করেই কয়েকটি মাইক্রোফোন ধরে ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে নানা প্রশ্ন শুরু করেন। আমি স্কুল শিক্ষক, এর আগে কখনো ক্যামেরার সামনে এভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন হইনি। এজন্য কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে বক্তব্য দিয়েছি, এতে দু’একটি কথা অগোছালো হতে পারে। তবে সেখানে কারা কাজ বন্ধ রাখতে হুমকি দিয়েছেন, এব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। কারণ প্রকৃপক্ষে তাদের কাউকেই আমি চিনি না। অথচ বিএনপির সাবেক ছাত্রনেতা তসলিম হাসান খান সুইট ও তার সমর্থরা এ কাজ বন্ধ করেছে বলে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বিদ্যালয় শিক্ষার জায়গা, অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে এখানে ঘৃণ্য রাজনৈতিক চক্রান্ত মোটেও কাম্য নয়।
নির্মাণ কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাজটি করছেন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ভিপি আজিজ। আ.লীগ সরকার পতনের পর তিনি পলাতক। এর ফলে কাজে ২/১ দিন স্থবিরতা দেখা দিলেও পরবর্তীতে পুরোদমে কাজ চলছে।