স্টার্ট নেটওয়ার্ক আয়োজিত ফোরওয়ার্ন ডিজাস্টার হ্যাকাথনের ফাইনালে উঠেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) দুইটি টিম। ওপেন ম্যাপিং হাব, স্টার্ট নেটওয়ার্ক, এশিয়া প্যাসিফিক এবং ফোরওয়ার্ন বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রথমবারের মতো ‘‘ফোরওয়ার্ন ডিজাস্টার হ্যাকাথন’’ ১.০ আয়োজন করে।
গত ৬ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রোগ্রামটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত।
৬ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ক্রিয়েট স্টেজ অর্থাৎ প্রতিযোগী রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলে। এই অনলাইন প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ৫২টি দল অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগীদের ২০টি পূর্বনির্ধারিত থিমের মধ্য থেকে যেকোনো একটি থিমে তাদের উদ্ভাবনী আইডিয়া সম্বলিত আড়াই মিনিটের একটি ভিডিও সাবমিট করতে হয়।
২০ আগস্ট ৫২টি টিমের মধ্য থেকে ১৫টি টিমকে চেক স্টেজের জন্য সিলেক্ট করা হয়। এসময় পাবিপ্রবির দুটি টিম ‘‘টিম কনকোয়ারর’’ এবং ‘‘টিম অপটিমাইজার’’ থেকে চেক স্টেজের জন্য সিলেক্ট হয়।
২০ আগস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর চেক স্টেজের কার্যক্রম সম্পন্ন করে মোট ৮টি দলকে ফাইনাল রাউন্ড অর্থাৎ কাল্টিভেট স্টেজের জন্য সিলেক্ট করা হয়। যেখানে পাবিপ্রবির দুটি টিমই চেক স্টেজ অতিক্রম করে ফাইনালে পৌঁছেছে।
ফাইনাল স্টেজের কার্যক্রম আগামী ২৪ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার সিসিডিবি হোপ ফাউন্ডেশনে সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেক টিমের সদস্যরা নির্ধারিত ভেন্যুতে উপস্থিত থেকে তিন দিনের ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করবে এবং বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ডিজাস্টার এক্সপার্টস, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার রিসার্চ পার্সন এবং মেন্টরদের অধীনে তাদের প্রোটোটাইপ ডেভলপ করবে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি টিমের মধ্যে টিম কনকোয়ারর-এর সদস্যরা হলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের মো. আসিফুল হক তমাল, নাজিফা আরা করিম, এইচ এম হাশেম আলী এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের কাজী আরিফিন জামিল। তাদের নির্বাচনকৃত থিম ছিল ‘‘সোশ্যাল মিডিয়া ইন্টেগ্রেশন’’। থিমের অধীনে তারা মেসেঞ্জার চ্যাটবট ডেভেলপ করছে।
টিম কনকোয়ারর-এর সাথে মেন্টর হিসেবে ছিলেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম এবং আইসিই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তরুণ দেবনাথ।
অপরদিকে টিম অপটিমাইজার-এর সদস্যরা হলেন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আনিকা তাবাসসুম, মো. সোহেল রানা, মরিয়ম ইসলাম তনিমা, মো. সাফিউর রহমান, মো. আব্দুর রহমান, মো সাব্বির ইসলাম এবং স্থাপত্য বিভাগের সাদিত আলম। তাদের থিম ছিল ‘‘ডিজাস্টার অ্যান্টিসিপেশন কোঅর্ডিনেশন’’। থিমের অধীনে তারা বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য স্বল্প খরচে একটি ভাসমান বাড়ি তৈরি করছে।
মেন্টর হিসেবে টিম অপটিমাইজার-এর সাথে ছিলেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, সহযোগী মেন্টর ছিলেন স্থাপত্য বিভাগের সরকারী অধ্যাপক সারজানা আফরোজ এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবির হাসান।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ফাইনালিস্ট দুই দলের সদস্যরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় উপাচার্য উভয় দলকে ফাইনালে উত্তীর্ণ হওয়ায় সাধুবাদ জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে সর্বোচ্চ অর্জন বয়ে নিয়ে আসার জন্য অনুপ্রেরণা দেন। এছাড়াও উভয় দলই এই প্রোগ্রাম থেকে বিজয়ী হয়ে ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উভয় টিমের সদস্যরা উপাচার্যকে তাদের পাশে পেয়ে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হন এবং তার এমন সহৃদয় সমর্থন উভয় দলের জন্য অনেক বেশি অনুপ্রেরণাদায়ক হবে এবং প্রোগ্রাম থেকে ভালো কিছু বয়ে আনার জন্য সচেষ্ট আশাবাদ ব্যক্ত করেন।