পাবনা হাসপাতালে ৩ দিন ধরে স্যালাইন পাচ্ছেন না ডেঙ্গু রোগীরা

গত ৩ দিন ধরে তরল স্যালাইন পাচ্ছেন না পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগীরা। শুধু স্যালাইন নয় হাসপাতাল থেকে প্যারাসিটামলও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ অধিকাংশ রোগী ও তার স্বজনদের। এর ফলে বাইরে থেকে চড়া দামে কিনে স্যালাইন নিতে হচ্ছে তাদের। বেড়েছে রোগীসহ তার ম্বজনদের ভোগান্তি ও চিকিৎসা ব্যয়।

রোগীরা জানান, কেউ কেউ ৩ থেকে ৫ দিন যাবৎ হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও একটি স্যালাইনও মেলেনি হাসপাতাল থেকে। প্যারাসিটামল বা তরল স্যালাইনের মত বেশকিছু ঔষধ হাসাপতাল থেকে দেয়া হলেও এখন কেন তারা পাচ্ছেন না জিজ্ঞেস করলে একেক সময় একেক উত্তর মেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের থেকে। কখনো বলা হয় কেউ একজন স্টোর তালা মেরে চাবি নিয়ে বাইরে গেছেন, আবার কখনো বলা হয় স্যালাইনের সরবরাহ নেই। উত্তর যাইহোক এক্ষেত্রে তাদের ভোগান্তি ও ব্যয় দুটোই বাড়ছে বলে জানান তারা।

পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের দড়িভাউডাঙ্গা কালুপাড়ার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। ডেঙ্গু নিয়ে গত ৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এখন প্রায় সুস্থ্য তিনি। স্যালাইন সংকটের ব্যাপারে তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে আমি এখানে চিকিৎসা নিচ্ছি। এই কয়দিনে আমার ৪ টা স্যালইন লেগেছে। হাসপতাল থেকে একটা স্যালাইন তো দুরে থাক একটি প্যারাসিটামলও দেয়া হয়নি। বাইরে থেকে ২২০ টাকা করে কিনে নিতে হয়েছে। আমরা গরীব মানুষ এতো টাকার ঔষধ কেনা আমাদের জন্য জুলুম হচ্ছে।

আরেক ডেঙ্গু রোগী ইউনুস আলী বিশ^াস জানান, এর আগেও হাসপতালে এসেছি। দেখেছি অন্তত প্যারাসিটামল ও তরল স্যালাইন হাসপাতাল থেকে দেয়া হতো। গত ৪ দিন ধরে শুনছি স্যালাইন নাই। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

স্যালাইন সংকটের ব্যাপারে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, কিছু ঘাটতি থাকলেও ডেঙ্গু ও ডায়রিয়া রোগীদের জন্য স্যালাইন আছে। বাকি যেটুকু প্রয়োজন সেটি ২/১ দিনের মধ্যেই আসবে। কেনো রোগীরা স্যালাইন পাচ্ছেন না সেটি খতিয়ে দেখছি।

হাসপাতালের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে আড়াইশত থেকে তিনশত ব্যাগ স্যালাইনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে রোগীর সংখ্যার ওপর এ সংখ্যা কমে বা বাড়ে। তার বিপরীতে মজুদের সঠিক সংখ্যা না জানালেও প্রয়োজনীয় পরিমাণে রয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বছর পাবনায় মোট ২৫১ জন ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত হলেও এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৬ জন। গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৮ জন। ২৪ ঘন্টায় ২ জন করে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।