জনবসতিতে বালুর স্তূপ, বাতাসে উড়ে এসে পড়ে খাবারে : ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী সাঁড়া ইউনিয়নের জনবসতি ও সড়কের পাশে বিশাল জায়গাজুড়ে উঁচুু বালুর স্তূপ। বসতবাড়ি ও রাস্তার পাশে বালুর স্তূপের কারণে বালু উড়ে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। সামান্য বাতাসে বালু উড়ে বাড়িঘরে ঢুকছে। পথচারীদের চোখেমুখে বালু যাচ্ছে। এমনকি বাড়িতে রান্নার সময় ভাত-তরকারিতেও পড়ছে বালু।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীদের দাপটে তারা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বালুর স্তূপের কারণে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। গত ৭ আগস্ট সাঁড়া ব্লকপাড়া এলাকায় বালুর স্তূপে খেলা করতে গিয়ে বালুচাপায় দুই শিশু নিহত হয়। এসব ঘটনায় জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বালুর স্তূপ সরানোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সরেজমিনে উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের মাজদিয়া, সাঁড়া ৫ নম্বর ঘাট, ঝাউদিয়া, ইসলামপাড়া, আরামবাড়িয়া, সাঁড়া ব্লকপাড়া, মাঝদিয়া বড়পাড়া, ছোটপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জনবসতিপূর্ণ ও রাস্তার পাশে বিশাল বিশাল বালুর স্তূপ। বালুর স্তূপের পাশে গদিঘর বানিয়ে ইউনিয়নের ৫০-৫৫ জন এ ব্যবসা করছেন। বালুর গাড়ি চলাচলের কারণে রাস্তাঘাটের অবস্থাও করুণ।

সাঁড়া ইউনিয়নের রাস্তা দিয়ে ঈশ্বরদী শহরের পথে যাওয়ার সময় স্থানীয় বাবুল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়ির আশপাশে বালুর বিশাল বিশাল স্তূপ। বাতাস হলেই এসব বালু ঘরের মধ্যে ঢুকে যায়। আসবাবপত্র ও কাপড়চোপড় নষ্ট হয়। এমনকি খাবারের মধ্যেও বালু ঢুকে যায়। আমরা খুব ভোগান্তিতে আছি।’

সাঁড়া ব্লকপাড়া এলাকার বালু ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, ‘বালুর কারণে কিছুটা সমস্যা হয় এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। আমরা ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করি। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইনেন্স বা অন্য কোনো লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি আমাদের জানা নেই।’

সাঁড়া পানিহাটা এলাকার বালু ব্যবসায়ী ওয়াজেদ আলী মোল্লা বলেন, ‘বালুর কারণে বসতবাড়ি ও রাস্তার লোকজনের চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হয়, এটা সত্য; কিন্তু সবাই নিজ এলাকার মানুষ। তবে কেউ অভিযোগ করেন না।’

সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক রানা সরদার  বলেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও সরকারি জমিতে কেউ বালু ব্যবসা করতে পারবেন না। আগামী দুই মাসের মধ্যেই সরকারি জমি থেকে বালু সরিয়ে নিতে হবে। প্রশাসন থেকে এ নিদের্শনা জারি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পাবনা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক জি এম নজরুল ইসলাম বলেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বালু ব্যবসা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বালুর ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই বালুর স্তূপ ঢেকে রাখতে হবে। পরিবহনের সময়ও বালু ঢেকে রাখতে হবে। এ বিষয়ে খুব শিগগির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।