আক্ষেপ ঘুচছে পাবনাবাসীর, ৫শ শয্যা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু

কয়েক দশকের আক্ষেপ ঘুচছে পাবনাবাসীর, নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে ৫শ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ চত্ত্বরে এ হাসপাতাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর মধ্য দিয়েই শুরু হচ্ছে এ হাসপাতালের নির্মাণ কাজ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০০৮ সালে পাবনা মানসিক হাসপাতালের প্রায় একশ বিঘা জমি স্থানান্তর করে পাবনা মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয় এবং ওই বছরেই পাবনা মানসিক হাসপাতালের ক্যাম্পাসে চালু হয় পাবনা মেডিকেল কলেজ। এরপর ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওই মেডিকেল কলেজ ভবন উদ্বোধন করেন। প্রাচীন ও জনবহুল জেলা পাবনার চিকিৎসা ব্যবস্থা শোচনীয় হওয়ায় পাবনাবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে ৫শ শয্যার পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি সবার সামনে আসে।

এরপর ২০১৮ সালে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ভারত সরকারের অর্থানুকূল্যে ৬০০ কোটি টাকা একনেকে পাশ হয়। টেন্ডারও হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই পাবনা পুলিশ লাইনস মাঠে জনসভায় ভাষণ দেয়ার আগে ৫০০ বেডের এই পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ওইবছরের আগস্ট মাসে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের যৌথ উদ্যোগে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের দিনও ধার্য করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ওই কর্মসূচি বাতিল হয় এবং এরপর থেকে হাসপাতালের বিষয়টি অন্ধকারে চলে যায়। পরবর্তীতে প্রকল্পটিই বাতিল হয়ে যায়।

এদিকে একযুগেরও বেশি সময়ে আগে প্রতিষ্ঠা পাওয়া মেডিকেল কলেজের এনাটমি, সার্জারি, সাইকিয়াট্রি, মেডিসিন, বায়োকেমিস্ট্রি সহ ২৫ টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্র্যাকটিকেল শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনে হচ্ছেন বঞ্চিত। ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজের আউট টিচিং ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহার করা হলেও সেখানকার শোচনীয় অবস্থার জন্য এখনো শিক্ষার্থীরা অর্জন করতে পারছেন না প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছেন এই মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অবশেষে তাদের চিন্তা ঘুচছে।

গতকাল রাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি জানান, তার সরাসরি হস্তক্ষেপে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রকল্পটি গতি ফেরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এর সার সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হলে একনেকের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। সবশেষ রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিনের নিজ জেলার দ্বিতীয় সফরের দ্বিতীয় দিন (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্থর উদ্বোধন করলেন। এ হাসপাতাল নির্মাণ হলে বাড়বে চিকিৎসা সেবার মান, যেতে হবে না দূর দুরান্তের অন্য জেলায় । ফলে এ নিয়ে পাবনার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক আনন্দ। অন্যদিকে হাতে কলমে শেখার জন্য ৬ কিলোমিটার দুরের জেনারেল হাসপাতালে যেতে হবে না ও ক্যাম্পাসেই প্র্যাকটিসের সুযোগ মিলবে জন্য উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরাও।